বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 মর্তের করোনা, স্বর্গের যাতনা


বাসে বসে বসে কেমন যেন একটা ঢুলুনি ভাব এসে গেছিল। এত দিন পরে দূরদেশ যাত্রা করছি বেশ একটা শিহরণ বোধ করছিলাম। কিন্তু বাসে ওঠার পর থেকে আর সেই বোধ নেই। জীবনকালে একটাও শী হরণ করতে পারলুম না, এখন আর শিহরণ জাগে কি প্রকারে? সে যাক। সবে নিজের নাকের ডাক নিজেই শুনতে শুরু করেছি এমন সময় বাসের ড্রাইভার চিল্লে উঠলো "বৈতরণী বৈতরণী"। লোকটা বলে কি? সবে মাত্র মজুরী ক্যান্টিন থেকে কুমড়োর ছেচকি দিয়ে আর পুঁইশাক এর চচ্চরি খেয়ে বাসে উঠলুম, এর মধ্যেই বৈতরণী? কি আর করা, অগত্যা বাস থেকে নেমে গেলুম। নেমেই তো চক্ষু কপালে। আজকের দিনে হল কি? একসাথে এত লোক নদীর পারে করছেটা কি? বৈতরণীতে ভাসান হয় তো জানতুম না। বৃদ্ধ, দেহাতি, বামুন, কায়স্থ সবকে একসাথে কুনুই এর ধাক্কায় কুপকাত করে এগিয়ে গেলুম। এইসব ব্যাপারে আমার আবার একটু বেশী তাড়া। গঙ্গাসাগর দুবার ভিজিট করে দেহাতি ঠ্যাঙ্গানো প্রক্রিয়ায় আমি বিশেষ পারদর্শী। ছাতু আর লিট্টু খেয়ে এদের মনে বল ভরসা অসীম হলেও কায়িক জোর সীমিত। আমার মত ছ'ফুটিয়া ঢ্যাঙা হলে এদের অনায়াসে কুপোকাত করে এগিয়ে যাওয়া যায়। অবশ্য এরা মিলিত শক্তি হিসেবে ধোলাই দিলে কি হত সেই বিষয়ে আমি জানিনা। যাই হোক, কোন মতে গুঁতিয়ে তো নদীর পার অব্দি আসা গেল, কিন্তু এবার কি? 

অস্থায়ী ইমিগ্রেশন অফিস নামে একটা ঘর দেখে সেদিকেই এগিয়ে গেলাম। বাঙ্গালীর অন্যান্য প্রিয় কাজের মধ্যে একটি হল লাইন দেওয়া। রেশন হোক বা ব্যাঙ্ক, ধন্তেরাসে সোনার দোকান হোক বা গোল্ড লোণের অফিসে লাইন। বড় ক্লাবের পূজা মণ্ডপ হোক বা শ্মশানের সার্টিফিকেট অফিস। সব জায়গায় বাঙালী লাইন দিতে ভালোবাসে। যুবক যুবতীরা আগে লাইন মারতে ভালোবাসতো। নোট বন্দীর পরে এখন তারাও ব্যাঙ্কের বাইরে লাইন দিতে ভালোবাসে। কেন লাইন, কি জন্যে লাইন সেই বিষয়ে খোঁজ রাখে কম। এই তো সেদিন ব্যাঙ্কে গিয়ে একজনের পিছনে গিয়ে দাঁড়ালুম। বললুম, দাদা এটা কি টাকা জমা দেওয়ার লাইন। ভদ্রলোক যেন আকাশ থেকে পরলেন। উনি ভেবেছিলেন ব্যাঙ্কে ঢুকতেই লাইন দিতে হয়। লাইনটা পাশ বই আপডেট করার ছিল। বাঙ্গালীর আর দেহাতির বড় সাধ প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন এসে পাশ বই আপডেট করানো। শুধু এইটুকু দেখার জন্যে গ্যাসের টাকা এসেছে নাকি। কোন এক সহৃদয় ব্যাক্তি লাইনের অগ্রভাগ থেকে আমার আকুতি শুনেছিলেন। উনিই শেষ রক্ষা করে দরজা দিয়ে উঁকি মেরে জানালেন, না দাদা কার্ডে টাকা জমা করলে লাইন দিতে হচ্ছে না। বাপস! হাঁফ ছেড়ে বাঁচলুম। পকেট থেকে এটিএম কার্ড বের করে সেই যাত্রা লাইনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলুম। এই বেলা সেই চেষ্টা করবো বলে লাইন ফাঁকি দিতে গেছি একটা বাঁধাকপি পুলিশ এসে ক্যাঁক করে আমার ঘাড় ধরল। 'পরোয়ানা??' 

বলে কি? স্বর্গে যেতে আবার পরোয়ানা লাগে নাকি? আমার ঠাট্টা শুনে পশ্চাৎদেশে ঐ মিলিটারি বুটের রোষায়িত পদাঘাতে গণ্ডী পার করে দিলেন। কাগজ না দেখালে অফিসেই ঢুকতে দেবে না, স্বর্গে যাওয়া তো দুরস্থান। কিছু ফিচেল ছোড়া আমার অবস্থা দেখে হাসছিল। ওদের কাছে জানতে পারলুম ওটা চিত্রগুপ্তের অফিস। স্বর্গে এখন লকডাউন চলছে। যমালয় থেকে তাই কমিশন গঠন করে এই অস্থায়ী অফিস বানানো হয়েছে। কিম কর্তব্য বিবেচনা করতে না পেরে অগত্যা গাত্রোত্থান করতেই হল। প্যান্টের ধুলো ঝেড়ে নদীর পারে একটা বাধানো ঘাটে গিয়ে বসলুম। 


ঘাটে এক সন্নেসী হুম হুম করে ধূম কুণ্ডলী নিঃশ্বাসে ব্যাপৃত করছিলেন। কিছু উজবুক সেই দৃশ্য দেখেই বেবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। বাবাজীর ফন্দি ভালোই বোঝা যাচ্ছে। ঐ করে ভক্ত পটিয়ে বেশ চালডাল কলা মুলো বাগিয়ে নেবে। প্রাপ্তির ঠিকানা যে কি সে তো জানাই আছে। বাবাজী চোখ বন্ধ করেই ছিলেন, এমন সময় আমার দিকে রক্তিম দৃষ্টি প্রয়োগ করে বললেন, 'সোয়ারগ পে জায়েগা?' 

হাত জোর করে সম্মতি জানালুম। 

"নদী মে ডুবকি লাগাকে উস্পার চলে যা।"


মোল যা! তিনদিনের করোনায় বলে আমার সদ্য পঞ্চত্যপ্রাপ্তি হয়েছে। নিউমোনিয়া এখনও ঠিক করে সারেনি। এর মধ্যে ডুব সাঁতার দিয়ে আবার মরি আর কি। বাবাজী সুবিধার নয় বুঝে ঘাট থেকে উঠে এলুম। এই জায়গায় নদী বেশ শান্ত। বেশ সুন্দর ডাগর ডাগর ফুল ফুটে আছে চারিদিকে। কিন্তু হায় রে পোরা কপাল। এই জগতে যদি কিঞ্চিৎ ফাঁকা জমিও পরে থাকে বাঙালী সর্বত্র। কিছু সেলফি মামনি মরে গিয়েও কেমন দেখতে লাগছে সেই বিষয়ে নাক মুখ বেঁকিয়ে সেলফি তুলছে। ব্যাকে নদীর ল্যান্ডস্কেপ। 

গঙ্গাসাগর যাত্রার স্মৃতি মনে পরে গেল। একজনের লিখিত রূপের অবিকল এখানে দিচ্ছি, সুলক্ষনা বহু সধবার সমাবেশ সেথা লক্ষণীয়। প্রত্যেকেরই যৌবন কালক্রমে অতিবাহিত হইয়া এক প্রকার অবক্ষয় এর পথে। তাহাদের উত্থিত প্রাক যৌবনের সমূহ সামগ্রীর প্রতি উদাসীনতার কারণেই হয়ত আবরণ সম্পর্কে তাহারা কিঞ্চিৎ উদাসীন। প্রায় প্রতি সধবাই তাহাদের বক্ষ পেশীর আস্ফালন অতি উদার ভাবে প্রদর্শিত করিয়া আপনা দিগের স্নান পর্বাদী সমাপন করিয়া বস্ত্র পরিবর্তন করিতেছিল। কথিত হয়, সাগর পারে সুদূর দেশের সমুদ্র তটে মেমসাহেবদিগকে এই প্রকার নগ্নপ্রায় দর্শন করা যায়। কিন্তু এই স্থান দৃশ্য সম্পূর্ন অন্য। বিপুল দেহী অতিকায়, অথবা জীর্ণ ক্ষীণ অতি দীন বপুধারী রমণীদের উন্মুক্ত বসনা দৃশ্য। না তাহা মনকে প্রলুব্ধ করে, না তাহা সুপ্ত পৌরুষের আভিজাত্য কে আহ্বান করে। কেবল একরাশ ঘৃণা ও তৎসহযোগে অর্ধ পাচিত খাদ্য সামগ্রী দেহের অন্তঃসল হইতে জিহ্বার অগ্রভাগে অনিয়া দেয়।

না মশাই কোন জায়গাই পোষাচ্ছে না। একরাশ বিরক্তি নিয়ে স্থান পরিবর্তন করতেই দেখলাম নদীর পারে এখানে বেশ লোকজন জড়ো হয়েছে। কিছু বামুন এর মধ্যেও দু'পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। বড় বড় যজ্ঞকুণ্ড বানিয়ে সেখানে ঘৃতাহুতি দিয়ে নদী পারের ব্যাবস্থা করছেন। কিছু মানুষ বেবাক সেই ছলনা হজম করে প্রণামী দিচ্ছে। নদীর ধারে বালির চরে এক পাল গরু আর বাছুর নিয়ে গোয়ালারা রফা করছেন। ব্রাহ্মণ কে গোদান করলেও মুনাফা, আবার বাছুরের লেজ ধরে নদী পার করলেও মুনাফা। অর্ধেক পথ গিয়েই মানুষ তলিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাছুর দিব্য এই পারে ফিরে আসছে। ফলে ঐ মোবাইল ফোনের মতোই আনলিমিটেড প্রাপ্তি। এর মধ্যে এক দেহাতি চাষা গোয়ালাকে প্রাপ্য দিয়ে এক বাছুরের লেজ ধরে দিব্য সাঁতরে ওপারে চলে গেল।  সেই দেখে তো এক বামুনের কি তম্বী! গোয়ালাকে ধমক ধামক দিয়ে সস্তায় রফা করে তিনি যেই না একটা বাছুরের লেজ চেপে ধরলেন অমনি বাছুর দিল হেব্বি ছুট। বামুন মানুষ, শনি পুজোতে ফুল ছুড়ে যার অভ্যেস তিনি কি আর দেহাতি চাষার মতন পারেন। কাদার মধ্যে ক্যোঁৎ করে পরে একেবারে লুটোপুটি খেলেন। এমন সময় কিছু যুবক যুবতী রে রে করে তেড়ে এলো। বাছুরের লেজ ধরে এমন ভাবে বৈতরণী পার অমানবিক। কেউ কেউ আবার মোবাইল খুলে লাইভ করা শুরু করে দিলো। এক মামনি বাছুরকে চিমটি কেটে আদর করতে লাগলো। 

এক মামনি আবার আয়োডেক্স এনে বাছুরের কপালে লেপে দিল। সেই ঝাঁঝে বাছুর তো কেঁদেই অস্থির। সঙ্গে সঙ্গে চতুর্দিকে একসাথে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠলো। বাছুরেরও প্রাণ আছে, বাছুর  ও কাঁদে ইত্যদি ট্যাগ লাইন দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট শুরু হয়ে গেল। 

যারা বাটি হাতে গরুর পশ্চাতে ঘুরছিল এতক্ষণ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মরে যাওয়ার পরেও গোমূত্র খাবে বলে বাটি হাতে এসেছিল। এখন লাইভ সেশান দেখে ঘাবড়ে গেছে। গোয়ালা বেচারা, 'হামি গরীব আদমি, গরীব আদমি' বলে হাত জোর করে লাইভে এসে ক্ষমা চাইছে। 


এইসব উপভোগ করছি এমন সময় পাশের ঘাটে চিট ফান্ড, চিট ফান্ড বলে রব উঠলো। একদল লোক বুক চাপরে কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন। গরূঢ় পুরাণে আছে, সৎ গুরু সঙ্গ নিলে বৈতরণী পার হয় সহজে। সেই উদ্দেশ্যে মর্তে যারা নিজেদের সঞ্চয়ের অধিকাংশ গুরুর সেবায় দান করেছেন তারা এখানে এসে জানলেন ঐ গুরু ভুয়ো। মর্তেও চিট ফান্ডে টাকা ঢেলে অনেক বাঙালী সর্বস্বান্ত হয়েছে, এখানেই বা ব্যাতিক্রম কেন? 

এতো সব হচ্ছে এমন সময় জবাব চাই, জবাব দাও রব শোনা গেল। সেই তো। পলিটিকাল বাঙালী এখানে এসেই বা নীরব থাকে কেন? শান্ত নদীর পার এক সাথে এত লোকের শোরগোলে একেবারে মাছের বাজার হয়ে গেছে। তারকানন্দ নিউজ থেকে একজন রিপোর্টার আর তাঁর ক্যামেরাম্যান সাথী দৌড়ে গেলেন মিছিলের দিকে। সাদা জামা, সাদা চুল হুমদো একটা লোক হাউ হাউ করে কিসব বলছেন। উনি বলছেন কম, থুতু ছুড়ছেন বেশী। একে মহামারী তায় এমন থুতু ছেটালে যে কেলেঙ্কারি? এতো গুলো লোক কে একসাথে ডেকে এনে কোন সুব্যাবস্থা না দিয়ে এইভাবে ফেলে রাখার প্রতিবাদ করছেন তারা। প্রথমত একটা আইসলেশান সেন্টার নেই, ব্রিজের পরিকাঠামো নেই। একটা ছিল, সেটাও ভেঙ্গে পরেছে দালাল চক্রের চালিয়াতিতে। নৌকার ব্যাবস্থাও করেনি। কিছু নেতা গোত্রীয় লোক কাট মানি নিয়ে নদী পার করে দিচ্ছেন গুপ্ত পথে, বা কাগজ জোগাড় করে দিচ্ছেন। যারা জন্ম থেকে পাপ করে আসছে তারাও কপালে তিলক কেটে পার পাওয়ার ধান্দা করছেন। কোন এক নায়ক নাকি তোরজোড় শুরু করেছেন পরিযায়ী স্বর্গযাত্রীদের নৌকো চাপিয়ে ওপারে পাঠানোর। কিন্তু ঈশ্বর কি করছেন সেই নিয়ে প্রতিবাদ।


এমন সময় সেই ক্যামেরাম্যান নদীর অন্য পারে ক্যামেরা তাগ করে জুম করলেন। সেই বিবরণী আরও ভয়ানক। গণেশ নাকি ঠিক করে মাস্ক পরতে পারছেন না বলে বারান্দা থেকে নামছেন না। কার্তিকের ময়ূর নিয়ে কোন এক সোশ্যাল মিডিয়া প্রেমী ছবি তুলতে সেই যে গেছে এখনও ফেরত আসেনি। ওদিকে বিষ্ণু নতুন মন্দির বানিয়ে নাসানিনাদে দিবাপক্ষের নিদ্রা সম্পন্ন করছেন। মা দুর্গা, দুই মেয়েকে নিয়ে শপিঙে গেছেন। আর মাস কয়েক বাদেই বাপের বাড়ি যাবেন। স্বর্গে নাকি ধুতিলুন্স এ ব্যাপক অফার দিচ্ছে। ওদিকে ভোলেবাবা আছেন নিজের মতন। ভারতীয় নারকোটিক্স দপ্তর নাকি সম্প্রতি একাধিক নায়ক নায়িকার থেকে উত্তম প্রকার গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেছে। ভোলেবাবা সেই স্টক আমদানি করে চেখে দেখছেন। ওরে বাবা! এই গাঁজার সলিড দম। ফেলটু নায়ক নায়িকার ফ্রাস্ত্রু গোছানোর চাবিকাঠি। কাজেই ভোলেবাবা সেই গাঁজায় দম দিচ্ছেন আর ব্যোম ব্যোম বলে ধোঁয়া ছাড়ছেন। 


এত অরাজকতা, এত অনিয়ম নদী পারে, তবুও মানুষ মহেস্বর আর বিষ্ণুকে স্মরণ করছে, ব্রহ্মাকে কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। ব্রহ্মা তাই ভীষণ অপমানিত বোধ করে পদ্ম ফুলে চেপে বসে আছেন। এর পিছনে উনি এক ভয়ানক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। 


দামাল ছেলেদের দৌরাত্ম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল। নারদ কি করবেন বুঝে উঠতে না পেরে দামালদের সামাল দিতে এইপারে চলে এসেছিলেন। এযুগের ছেলেপিলে গিভ রেস্পেক্ট, গেট রেস্পেক্ট এ বিশ্বাস করে। নারদ ফুট কাটতে আসা মাত্রই তাই চাপিয়ে দিয়েছে বিরাশি সিক্কা চর। বাপের জন্মে চর না খাওয়া নারদ তাই নদীর চড়ে বসে ঘোঁত ঘোঁত করে হাফাচ্ছেন। 

এমন সময় যমরাজের আগমন। মুষ্ক কিছু বাহিনী নিয়ে উনি লেলিয়ে দিলেন প্রতিবাদী মিছিলে। যমদূতগুলো নিমেষে নিজেদের ড্যাঙ্গস পেটা করে হাতের সুখ করতে শুরু করে দিল। যমরাজের সাক্ষাৎ বাহন মোষ ঝিলিক দেওয়া সিং বাগিয়ে গুঁতোতে শুরু করলো। এই মরেছে! মোষ যে দেখি এদিকেও আসছে। একে নিউমোনিয়া তায় কোনদিন প্রাণভয় দৌড়াই নি। তবুও দিলাম ছুট। একটু আড়াল পেয়ে নদীর ধারে একটা ঝপের পিছনে যেতেই দেখি একটি কুকুর। আরে! সেই কোন নেটওয়ার্ক এর কুকুরটা না?

'মূর্খ!'

সে কি! কুকুরেও কথা বলছে যে!

'আমি কোন নেটওয়ার্কের কুকুর নই, আমি মহাপ্রস্থানের কুকুর।'


'ও হরি! সেই পাণ্ডবের কুকুর?' 

'হ্যাঁ আমি সেই।'

এর থেকে ভালো মউকা আর কিই বা হতে পারে? শুরু করলাম অনুসরণ। কিছুদূর যেতেই নদীর তট অপেক্ষাকৃত শূন্য হয়ে এলো। ভির বাঁচিয়ে এমন নির্জনে স্বর্গলাভ বিশাল ব্যাপার। মনে মনে আমোদ অনুভব করছি। দূরে দেখতেও পেলাম যেন নদীর দুই পার সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। হেঁটে পার করা যায় অনায়াসে। ঠিক এই সময় বালির মধ্যে পা আটকে গেল।কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যোঁৎ করে পা ডেবে গেল অনেক খানি। অদূরে সাদা জোব্বা পরা একটা লোক বসে আছে। নায়ক সিনেমার মতোই দৃশ্যটা মনে পরে গেল। আমিও চিৎকার করে উঠলাম, 'শঙ্কর দা। শঙ্কর দা আমায় বাঁচান।' 


'মূর্খ! আমি ত্রিকালদর্শী।'

'আচ্ছা তা হবেন। কিন্তু এইবেলা তো টেনে তুলুন?'

"তুই ঋণের চোরাবালিতে ডুবেছিস। তোর তো মুক্তি নেই।" ত্রিকালদর্শী একগাল হেসে উঠলেন।

"কি বলেন মশাই। মর্তেও যে ঋণের চোরাবালি ছিল। এখানে তো এই সবে এলুম!"

"ঋণ শোধ না করে স্বর্গে যাবি ভেবেছিস?"

"আরে মশাই ছ'মাস তো কাজ করতেই পারলুম না। ইএমআই দেবো কি করে?"

"তবে তো তোর মুক্তি নেই" এই বলে ত্রিকালদর্শী নিজের স্থানে ফিরে গেলেন। কুকুরটি আপ্রাণ ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করে গেল। আমার শরীরটা একেবারে অর্ধেক ডুবে গেছে এখন। এই অসম লড়াই করে একেবারে ঘেমে গেছি আমি। ধস্তাধস্তি করছি এমন সময় কপ করে বালি আমায় গিলে নিল আর তারপরেই একটা ধপাস শব্দ।


ধরফর করে উঠে বসতেই খেয়াল হল আমি মেঝেতে পরে আছি। রাতে এসি ঘরে শোয়ার সময় চাদর নেওয়ার বাতিক আছে। স্বপ্নের আবহে সেই চাদর জড়িয়ে খাট থেকে দুম করে নীচে পরেছি। মোবাইলটা সেই থেকে একঘেয়ে সুরে বেজে চলেছে। এমন দুঃস্বপ্ন বাপের জন্মে দেখিনি। কোন মতে চাদরের ফাঁস মুক্ত হয়ে উঠে গিয়ে ফোন ধরতেই ওপার থেকে একটি মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। "রোগ হোক যা তা, সবেরই ত্রাতা ল্যাব" থেকে ফোন করেছে। 

'স্যার আপনি গতকাল করোনা টেস্ট করতে দিয়েছিলেন। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে স্যার।'


পুলক আর রাখি কোথায়? উচ্ছ্বাসে যে আমার নেত্য করতে ইচ্ছে করছে। ঢক ঢক করে এক বোতল জল সাবার করে দিয়ে গত রাতের স্বপ্ন নিয়ে ভাবছি, দেখি একটা মেসেজ ঢুকল ফোনে। আমার আজকের ইএমআই এর ইসিএস ব্যাঙ্ক থেকে রিজেক্ট হয়েছে অপ্রতুল অর্থ সংখ্যা থাকায়।

ত্রিকালদর্শীর কথা মনে পরে গেল। ঋণের চোরাবালি,  'ধুর শালা।' 

পাগলাদাশু 


মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০

An era of reusable N95 masks......Really??

সত্যি কি N 95 mask দ্বিতীয়বার ব্যবহারের উপযুক্ত???


কিভাবে একটা N 95 mask কে দ্বিতীয়বার ব্যবহারের উপযুক্ত করে নেওয়া যায়। সঠিক N 95 mask না পাওয়া গেলে কোন কোন mask উপযুক্ত। জেনে নিন সঠিক তথ্য।


COVID-19 পরবর্তী পরিস্থিতি গোটা বিশ্বের ডাক্তারি পরিসেবা কে একটা বড় প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিয়েছে। 

আদৌ কি আমরা প্রস্তুত এত বড় একটা মহমারী কে সামাল দিতে??

প্রতিদিন সারা বিশ্বে এই মহামারীর শিকার হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। প্রায় তিন লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। আর প্রাণ হারিয়েছেন তাদের সহযোদ্ধা বহু ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য কর্মী। 

এই মৃত্যু কি নেহাতই একটা মহামারীর ফলশ্রুতি নাকি কোথাও গিয়ে ডাক্তারি পরিষেবার গাফিলতি?? খানিকটা হলেও প্রশ্নচিহ্ন থেকে যায়। 

এই বিশ্ব ব্যাপী মহামারী যে চিকিৎসা বিষয়ে পরিকাঠামোগত অভাব চোখের সামনে তুলে ধরেছে তার প্রমাণ আর নতুন করে কিছু দেওয়ার নেই। 

এই যুদ্ধের পরিণতিতে হার স্বীকার করে ইতিমধ্যে NIOSH এবং OSHA, অনুমোদন না পাওয়া কোম্পানির ঘর থেকে তৈরি করা N95 মাস্ক ব্যবহারের কথা বলছেন। 

শর্ত সাপেক্ষে এই নতুন N 95 মাস্ক ব্যবহার করার কিছু নিয়ম তারা দিয়েছেন। এই নিয়মগুলি সামগ্রিক ভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১) Extended use protocols, অর্থাৎ ব্যবহারের সময়সীমা বর্ধিত করার অনুমোদন।

২) Reuse Protocols অর্থাৎ একটি মাস্ক এক কালীন ব্যবহার করে না ফেলে দিয়ে অনেকবার যাতে ব্যবহার করা যায় সেই নিয়মাবলী।



ভাইরাস কে আদৌ মারা সম্ভব??

হার্ভার্ড কলেজের অধ্যাপক মাইকেল মিনা বলেছেন, নিশ্চই একটি ভাইরাস কে মেরে ফেলা যায়। এবং সেই পদ্ধতি খুব একটা জটিল কিছুই না যদি ভাইরাস টি মানব দেহের বাইরে অবস্থান করে। "The simplest way is to take a mask and let it sit out for two weeks."

T.H Chan ও তাঁর বক্তব্য তে একই কথা বলেছেন। "We all know the virus tends to die out after ten days or so."

কি কি পদ্ধতিতে ভাইরাস কে মেরে ফেলা সম্ভব??

1) Irradiation
2) Fumigation
3) Hot water
4) Steam
5) Baking or Dry Heat

এই প্রত্যেকটি পদ্ধতি ভাইরাস কে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার জন্যে নিজেদের যথার্থতা প্রমাণ করেছে। 

কিন্তু একটি decontamination পদ্ধতিকে তখনই স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব যখন সেটা ব্যবহৃত মাস্কটির কোন রকম গঠনগত পরিবর্তন না করে একদম নতুন এর মতন ব্যবহার উপযোগী করে তোলে। 

3M কোম্পানি তাদের তরফ থেকে মোট চারটি শর্ত দিয়েছেন একটি decontamination পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্যে।

১) Decontamination করার পরেও মাস্কটি যেন SARS CoV 2 ভাইরাসের বিরুদ্ধে সমান কার্যকরী থাকে।

২) মাস্কের filter গুলোর কোন রকম ক্ষতি হবেনা এই পদ্ধতিতে

৩) একজন ব্যবহারকারীর মুখে দ্বিতীয়বার মাস্কটি বসানোর সময় যেন কোন রকম ফাঁক বা অসামঞ্জস্য না থাকে।

৪) ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের যেন কোন ক্ষতিসাধন না করে।



UltraViolet ray decontamination

Nebraska বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দল প্রমাণ করে দিয়েছেন যে একটি ব্যবহৃত N 95 মাস্ক কে বিশেষ ভাবে প্রস্তুত করা কক্ষের মধ্যে UV-c লাইট এর সাহায্যে মাত্র ১৫ মিনিটে sterilize করে আবার ব্যবহারের উপযোগী করে নেওয়া যায়। 



Fumigation decontamination

Duke বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি সম্পূর্ণ isolated কক্ষের মধ্যে 300-750 ppm হাইড্রোজেন পারক্সাইড বাষ্পের সাহায্যে মাত্র ২০ মিনিটে ব্যবহৃত N 95 মাস্ক কে পুনরায় ব্যবহারের উপযুক্ত করে দেখিয়েছেন। 

এই পদ্ধতির একটি খারাপ দিক হলো সময় সাপেক্ষ। একবার হাইড্রোজেন পারস্কাইড ব্যবহারের পরে অন্তত ৪ ঘন্টা সময় দিতে হয় শুধুমাত্র ঘর থেকে ওই বাষ্প কে নিষ্ক্রিয় করার জন্যে। 


এই সব পদ্ধতি বড় বড় হাসপাতাল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব হলেও ছোট চেম্বার বা দাঁতের ডাক্তারখানা তে সম্ভব নয়। অনেকের চেম্বারে হয়ত সম্ভব কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্ভব নয় বললেই চলে।



Hot water heating or Steam

February'2020 তে বেজিং এর একটি স্বাস্থ্য সংস্থা একটি বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যবহৃত মাস্ক কে দ্বিতীয়বার ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার একটি আর্থিক ভাবে সম্ভব এবং সরল উপায় আবিষ্কার করেন। এই পদ্ধতি কে ওনারা "regeneration treatment" নাম দিলেন।

মাত্র ৩ টি পদক্ষেপ এই কাজ করা সম্ভব।

৫৬⁰ C উষ্ণতার গরম জলের মধ্যে একটি ব্যবহৃত মাস্ক কে ৩০ মিনিটের জন্যে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে রাখতে হবে।

তারপর একটি non static hair dryer দিয়ে মাস্কটি কে শুকিয়ে নিতে হবে প্রায় ১০ মিনিটের জন্যে।

এই পদ্ধতি অবলম্বন করে মাস্কটি decontaminate করা সম্ভব। কিন্তু মাস্কটি নিজের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। এই পরীক্ষা করে দেখার জন্যে কতগুলি কাগজের টুকরো মাস্ক এর সামনে রেখে দিলে স্থির তড়িৎ এর আকর্ষণে সেই কাগজের টুকরো আবার মাস্ক এর সাথে লেগে যাবে। 

গরম জলের এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখা গেছে মাত্র একবারের জন্যেই মাস্কটি দ্বিতীয় বার ব্যবহার করার উপযোগী থাকে। তার পরে আর একটা decontaminate করলেও তার কার্যক্ষমতা চলে যায়।

মার্চ ২০২০ তে চীন দেশের স্বাস্থ্য দপ্তর একটি ব্যবহৃত mask কে  autoclave করে দ্বিতীয়বার ব্যবহার করার অনুমতি দেন। পরীক্ষা করে দেখা গেছে autoclave করলে সত্যি মাস্কটি কে ভাইরাস মুক্ত করা সম্ভব। এই আবিষ্কারের পর CDC ও সমর্থন করেছেন। 

Baking

Stanford বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিজ্ঞানী আবিষ্কার করলেন যে baking বা dry heat এর মাধ্যমে একটি মাস্ক কে ৭⁰ C ৩০ মিনিটের জন্যে রেখে দিলে মাস্কটি কে সম্পূর্ণ রূপে ভাইরাস মুক্ত করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা ও সময়ের দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যিক কারণ একটুও ভুলের জন্যে মাস্কটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।


Comparison

 Methods    Process        Time Efficacy    Cycles 
 UV-C           Decontamination under UVGI 15 mins 90%<10 decontamination     
 Fumigation    300-750ppm HPV 20 mins 90% 20 decontamination
 Boiling heat    56⁰ C water, 30 mins 80% 1-2 decontamination 
 Steam heat       Autoclaving at 121⁰ C,  30 mins    80%     1-2 decontamination 
 BakingHeating in 75-100⁰ C    30 mins 80% 20 decontamination 




ফলাফল

অতিবেগুনী রশ্মির প্রয়োগে একটি N 95 মাস্ক কে সম্পূর্ণ রূপে ভাইরাস মুক্ত করা গেলেও কিছু কিছু বিজ্ঞানী মহল এখনো এর কার্যকারীতা সম্পর্কে সন্দেহ রাখেন। প্রথমত একটি মাস্ক ত্রিমাত্রিক বস্তু হওয়ার কারণে অতিবেগুনী রশ্মির সব দিক থেকে একে decontaminate করা সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখাও গেছে যেখানে অতিবেগুনী রশ্মি পৌঁছাতে পারেনি সেখানে ভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে। 

হাইড্রোজেন পরক্সাইড এর ব্যবহার এ দেখা গেছে এই পদ্ধতি যথেষ্ট ভালো কাজ করে এবং প্রায় ২০ বার অব্দি decontaminate করলেও মাস্ক এর কাঠামোগত কোন পরিবর্তন হয়না। 

গরম জলে ফুটিয়ে নেওয়া বা autoclave পদ্ধতি যথেষ্ট ভালো কার্যকর হলেও এই পদ্ধতিকে অবলম্বনের জন্যে অনুমোদন দেওয়া যায়না। তার প্রথম কারণ একবার গরম জলে ফুটিয়ে নেওয়ার পরে একটি মাস্ক এর কার্যক্ষমতা ৯৫% থেকে ৮০% নেমে আসে। আর ৮০% কার্যক্ষমতা যুক্ত একটি মাস্ক কে কখনো N-95 বলা চলে না।

সব থেকে সস্তার ও ভালো পদ্ধতি হলো dry heat sterilization। একটি মাস্ক কে ২০-৩০ বার পর্যন্ত dry heat এর মাধ্যমে ভাইরাস মুক্ত করা সম্ভব। কিন্তু এই পদ্ধতির জটিলতা এবং একটু ভুল হলেই মাস্কটি খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্যে একেও অনুমোদন দেওয়া যায়নি। 

২৯সে মার্চ ২০২০, FdA থেকে HPV বাষ্প দিয়ে মাস্ক কে decontaminate করার পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 

যদিও 3M কোম্পানি থেকে এই পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে কোন তথ্য এখনো অব্দি জানায়নি। কোম্পানির তরফ থেকে বারবার বলা হয়েছে যে এই প্রত্যেকটি পদ্ধতি যেহেতু মাস্ক এর filter গুলির ওপর কিছু না কিছু হলেও প্রভাব ফেলে তাই N 95 মাস্ক যে দ্বিতীয়বার ব্যবহারের উপযুক্ত সে কথায় তাদের তরফে অনুমতি নেই। 

মাস্ক এর উৎপাদন এবং ব্যবহারের নথি।

একটি সমীক্ষা করে দেখা গেল। 3M কোম্পানি একাই  বছরে প্রায় ৫০ কোটি মাস্ক  উৎপাদন করতে সক্ষম। এই বছরের এরকম মহামারীর সময় তারা নিজেদের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ করার চেষ্টায় রয়েছে। এপ্রিল মাসের শেষ নথি অনুযায়ী 3M কোম্পানি প্রায় ৬০ কোটি মাস্ক ইতিমধ্যে প্রস্তুত করেছে। কিন্তু কোভিড আক্রান্ত দেশগুলির প্রায় ৩২০ কোটি জনসংখ্যার সাপেক্ষে এই উৎপাদন চাহিদার তুলনায় খুবই কম। আর এখানেই বিশ্ব স্বাস্থ্য বিষয়ে আধিকারিক সংস্থাগুলি বিকল্প রাস্তা নেওয়ার জন্যে অনুমোদন দিয়েছে।


একটি মাস্ক কে দ্বিতীয়বার ব্যবহার করায় কি কি অসুবিধা হতে পারে??

>ব্যবহারকারীর স্বাচ্ছন্দ্য থাকে না।

>মাস্কটি ঠিকঠাক মুখের সাথে বসতে চায় না।

>কার্যক্ষমতা কমে যায়।

>রুগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তারের নিজের সংক্রামিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।


N 95 এর বিকল্প কি কি আছে??

N 95 মাস্ক এর বিকল্প কিছু নেই। কিন্তু আংশিক ভাবে ব্যবহারের উপযুক্ত কিছু মাস্ক N 95 মাস্ক এর সমতুল কাজ করতে পারে। 


কখন একটি N 95 মাস্ক কে দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা যাবে আর কখনই বা ফেলে দিতে হবে??

NIOSH এর বলে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী

* একটি মাস্কের গায়ে যখন রক্ত, কফ, থুতু বা এই জাতীয় কিছু লেগে যায়। মাস্কটি বাতিল করা উচিৎ।

* যে কোন aerosol generaring procedure করলে মাস্কটি অবশ্যই বাতিল করে দিতে হবে।

* একটি surgical মাস্ক বা face shield এর ব্যবহারের মাধ্যমে N 95 মাস্ক কে আড়াল করলে তার গায়ে রক্ত বা থুতু সরাসরি লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। 

* একটি মাস্ক কে দিনে একাধিক বার ব্যবহারের জন্যে তাকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে না একটি কাগজের খাম অথবা পাত্রের মধ্যে রেখে দিতে হবে।

* ব্যবহার করা পাত্রটি অবশ্যই বাতিল করতে হবে আর নয়ত ভালোভাবে sterilize করে নিতে হবে।

* মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা আবশ্যিক। 

* দ্বিতীয়বার ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই মাস্ক এর fit test করে নিতে হবে। 

এই একই নিয়মাবলী OSHA এর তরফ থেকেও দেওয়া হয়েছে।


কিছু গবেষণার ফলাফল

১) প্রায় ৪৮% মাস্ক একবার ব্যবহারের পরে আর দ্বিতীয়বার কাজে আসেনা। কিছু না কিছু কারণে সেটি বাতিল করতেই হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর ভুলের জন্যে একটি মাস্ক কে বাতিল করে দিতে হয়।

২) একটি মাস্ক যদি কোন রোগীর হাঁচি বা কাশির থেকে নোংরা হয়ে যায় তাকে অবশ্যই নিয়ম মেনে বাতিল করে দেওয়া উচিত।

৩) একজন COVID-19 রুগীর সামনে ব্যবহার করা মাস্ক কোন ভাবেই দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা উচিৎ নয়। সঠিক sterilization পদ্ধতি ব্যবহারের উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকলে সেই মাস্ক এর ব্যবহার ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কর্মীকে সংক্রামিত করে দিতে পারে।

৪) নির্দিষ্ট solution ছাড়া অন্য কোন রকম antimicrobial solution ব্যবহার করে mask কে পরিষ্কার করা উচিৎ নয়।

৫) UVGI এর ব্যবহারে একটি মাস্ক কে sterilize করা সম্ভব। কিন্তু N 95 মাস্ক এর কোম্পানির বিবর দেখে তবেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করা ভালো। UV ray এর প্রভাবে মাস্ক এর কোন উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কিছু অনুমোদন প্রাপ্ত N 95 মাস্ক এর বিকল্প।

1) NIOSH - N95 - 42CFR84

2) FFP2 EN149-2001

3) KN95 GB2626-2006

4) P2 AS/NZ 1716/2012
5) Korea 1st Class KOMEL-2017-64

6) Japan DS2 JMHLW 214-2018


Top 10 N-95 manufacturers in 2020

3M        -        Honeywell         -         Kimberly Clark Corp.

Ambu    -        BD                    -         Prestige Ameritech

Alpha Pro Tech        -         Louis M. Gerson Company

Teleflex        -            Moldex

Shanghai Dashend         -        Future trends


How to check a Proper N-95

1) Check the approval authority. An original mask must have a NIOSH logo
2) Check the model number and correlate with Google
3) Check for the TC-approval number
4) Check for the Lot number



  Presented by Dr. Arka Bhattacharya
 


Infromations from

ECRI Clinnical evidence assessment
FDA N-95 respirators and surgical masks
Strategies for optimizing supply of N-95 respirators
FDA, understanding the difference
PubMed
3M website and brochure 
Duke University data access
CDC.gov